ছোলা বাদাম কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয় ছোলা বাদাম কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন । তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনি পড়ুন । এ বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া আছে এই আর্টিকেলে । এবং এই আর্টিকেলে এটাও বলা হয়েছে যে প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত ।
ছোলা বাদাম এবং কিসমিস সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়ুন । নিচে এই বিষয়গুলো ভালভাবে আলোচনা করা হয়েছে ।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ পোস্টগুলো পড়তে নিচে ক্লিক করুন ।
- ভুমিকা
- ছোলা বাদাম কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
- চিনা বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
- কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়
- শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়
- প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
- কাচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- লেখক এর শেষ কথা
ভুমিকা
মানুষের শরীরে সবসময় শক্তির প্রয়োজন । কারন শক্তি ছাড়া চলা ফেরা করা দায় হয়ে পড়ে । যেকোনো কাজ করতে ,চলা ফেরা করতে এবং খেলা ধুলা করতে শক্তির প্রয়োজন হয় । কিন্তু এসব শক্তি এবং পুষ্টি পাব কোথায় ? এ সব শক্তি পাওয়া যাবে ছোলা বাদাম এবং কিসমিস খাওয়ার মাধ্যমে । কারন ছোলা বাদাম এবং কিসমিসে অনেক পুষ্টি ও শক্তি রয়েছে ।
তাই বেচে থাকতে হলে শক্তির প্রয়োজন । আর শক্তি পেতে হলে খেতে হবে পুষ্টিকর মানসম্মত খাবার । তাই ছোলা বাদাম এবং কিসমিস খেতে হবে নিয়মিত , যদি শক্তি অর্জন করতে চান ।
ছোলা বাদাম কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
মানুষের শরীরে প্রতিনিয়ত শক্তির প্রয়োজন হয় । কারণ যে কোনো কাজ করতে হলে
শক্তির প্রয়োজন । শক্তি ছাড়া যে কোন কাজ করা এবং চলাফেরা করা কষ্টকর হয়ে
পড়ে । কারণ শরীরে যদি শক্তি না থাকে তবে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে । তাই
দেহে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করতে হলে খেতে হবে পুষ্টিকর এবং ভিটামিন জাতীয়
খাবার ।
সেজন্য আপনি খেতে পারেন ছোলা বাদাম এবং কিসমিস । এ সকল খাবারগুলো প্রাকৃতিক
খাবার । এতে রয়েছে সম্পূর্ণ ভিটামিন এবং পুষ্টি । যার শরীরে
শক্তি যোগাতে সাহায্য করে । এই সকল পোষ্টিকর খাবার গুলো নিয়মিত খেতে
হবে । তাহলে শরীরে যে পুষ্টি এবং ভিটামিনের ঘাটতি রয়ে যায় তা পূরণ হয়ে
যাবে ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ছোলা বাদাম এবং কিসমিসের
উপকারিতা সম্পর্কে
। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন ঃ শীতকালীন সবজির উপকারিতা-সবজি চাষের সময় সূচি জেনে নিন
ছোলা
বাঙালি জাতির খাদ্যের তালিকায় রয়েছে এই ছোলা । ছোলা মানুষ খাদ্য
হিসেবে চিনে । কারণ এটা খাদ্দভাসের মধ্যে পড়ে । বিশেষ করে
বাঙালিরা ছোলার সাথে বেশি পরিচিত । কারণ বাংলাদেশের অধিকাংশ জমিতে ছোলা চাষ
করা হয় । ছোলা খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি এটার উপকারিতা এবং গুনাগুন
রয়েছে ।
ছোলা খেলে যে সকল উপকারিতা গুলো পাওয়া যায় সেগুলো হলো ঃ
-
নিয়মিত ছোলা খেলে হজম করতে সাহায্য করে । হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ছোলা
গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য উপাদান ।
-
ছোলা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে । অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেলে
শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয় । সেজন্য শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা
কমানো উচিত । আর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য নিয়মিত ছোলা খেতে
পারেন ।
-
ক্যান্সারের মতো কঠিন রোগ থেকে নিরাময় পেতে ছোলা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি
খাদ্য উপাদান । নিয়মিত ছোলা খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় ।
-
হাড় শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে ছোলা ।
-
বাদাম শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে । তবে অতিরিক্ত বাদাম খাওয়া উচিত
নয় । নিয়ম মেনে প্রতিদিন এক মুঠ বাদাম খাওয়া উচিত । এতে
শরীরের ওজন কমবে ।
-
বাদাম স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে সাহায্য করে । অনেকে রয়েছে যারা সব সময়
সব কথা মনে রাখতে পারে না । সেজন্য তাদের উচিত নিয়মিত বাদাম খাওয়া
। বাদাম খেলে স্মৃতি শক্তি ভালো থাকে এবং উন্নত হয় ।
-
দেহের ভিটামিনের অভাব পূরণ করে এবং প্রোটিনের করতে সাহায্য করে বাদাম
। এবং বাদাম খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
।
-
বাদামে এক ধরনের ফলিক অ্যাসিড থাকে , যা ক্যান্সারের প্রতিরোধ করতে
সাহায্য করে ।
-
নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে কোষ্ঠ কাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
। কারন কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার । যা কোষ্ঠ কাঠিন্য
রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে ।
-
অনেক মানুষ হয়েছে যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চাই । অতিরিক্ত চিকন হওয়ার
কারণে তারা নিজেদের ওজন কিছুটা বৃদ্ধি করতে চায় । সেজন্য খাওয়া
উচিত কিসমিস । কিসমিস ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ।
-
এছাড়া নিয়মিত কিসমিস খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে । রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে কিসমিস ।
-
কিসমিস খাওয়ার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ।
চিনা বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
বাদাম আমার একটি খাবার যা সকল মানুষের প্রিয় । আড্ডা জামাতে বাদাম একটি খুব
সুন্দর খাবার । যে কোন জায়গায় বেড়াতে গিয়ে ঘুরতে গিয়ে অথবা সময়
কাটানোর জন্য গেলে আমরা অবশ্যই বাদাম খেয়ে থাকি । কারণ এটি একটি জনপ্রিয়
খাবার । বিশেষ করে পার্কে অথবা খেলা দেখতে গেলে বেশি বাদাম খাওয়া হয়
।
নিয়মিত বাদাম খেলে শরীরের অনেক উপকার হয় । রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে বাদাম । বাদাম খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি এর
গুনাগুন । বাদাম খাওয়ার ফলে দেহের অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব । কারণ এক
মুঠো বাদাম খেলে প্রায় ৩০ গ্রাম ওজন কমায় । এছাড়াও বিভিন্ন রোগ থেকে
মুক্তি পেতে সাহায্য করে ।
যেমন, হৃদরোগ জনিত রোগের প্রতিরোধ, স্মৃতিশক্তি
বৃদ্ধি, কোলেস্টেরল কমায়, রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখতে, ওজন
কমাতে ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে চিনাবাদাম । সেজন্য নিয়মিত
আমাদের বাদাম খাওয়া উচিত । বাদাম খেলে এ সকল সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়
।
তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে প্রয়োজনের বেশি বাদাম খাওয়া যাবে না । কারণ এটা একটি তেল জাতীয় খাবার । অতিরিক্ত খেলে শরীরের সমস্যা হতে পারে । পুষ্টিকর বলে যে অতিরিক্ত পরিমাণে খেতে হবে তা মোটেও করা যাবে না । পরিমাণ মতো বাদাম খেতে হবে তবে এর সঠিক উপকার পাওয়া যাবে ।
কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়
অনেক মানুষ রয়েছে যারা রোগা এবং পাতলা । তারা প্রতিনিয়তই মোটা হওয়ার জন্য
বিভিন্ন উপায় জানতে চাই । যে কিভাবে দেহের শক্তি বৃদ্ধি করা যায় এবং মোটা
হওয়া যায় । সেজন্য তাদের উচিত নিয়মিত ছোলা খাওয়া । আমরা বাঙালিরা
প্রায় সকলেই তোলা চিনি । কারণ বাংলার জমিতে, মাঠগুলোতে এ সকল ফসল
উৎপাদন করা হয় ।
ছোলা একটি আমিষ জাতীয় খাবার । যেমন মাছ মাংস আমি জাতীয় খাবার
। মানুষজন পুষ্টি ও ভিটামিন যোগাতে মাছ মাংস ডিম ইত্যাদি খেয়ে থাকেন
। কিন্তু হয়তো অনেকে জানে না যে ছোলা একটি আমিষ জাতীয় খাবার । এইতো
রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন । যা শক্তি জগতে এবং মোটা হতে সাহায্য
করে ।
১০০ গ্রাম ছোলাতে রয়েছে ৬৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট । এবং ছোলা ফ্যাট
জাতীয় খাবার । প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলাতে পাঁচ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়
। যা মোটা হতে সাহায্য করে । এজন্য নিয়মিত ছোলা খেতে পারেন
। যারা মোটা হতে ইচ্ছুক অথবা শক্তি বৃদ্ধি করতে চান ।
আরও পড়ুন ঃ মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায়
শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়
কিসমিস একটি উপকারী এবং প্রচুর পুষ্টি ও ভিটামিন সম্মত একটি খাবার । এই
কিসমিস আমরা অনেক কাজে ব্যবহার করি । যেমন পায়েস রান্না করতে, সেমাই
রান্না করতে, তারপর পোলাও রান্না করতে ব্যবহার করা হয় কিসমিস । এটা
শুধু রান্নার কাজের জন্যই ব্যবহার করা হয় তা কিন্তু নয় । দেহের বিভিন্ন
ধরনের উপকারিতা এবং রোগের সমাধান পেতে কিসমিস খাওয়া যায় ।
নিয়মিত যদি ১০০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া যায় তাহলে সেখান থেকে ২৯৯ কিলো ক্যালরি
শক্তি পাওয়া যায় । এবং ৩.০৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে, এবং ৩.০৭ গ্রাম
খাদ্য আঁশ থাকে । এছাড়াও কিশমিশে আরো অনেক পুষ্টি পাওয়া যায় । যা
শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং প্রয়োজনীয় । শুকনো কিসমিস খেলে যে সকল
উপকারিতা গুলো পাওয়া যায় সেগুলো হলো ঃ
- দেহে শক্তি যোগায়
-
রক্তচাপ কমায় এবং রক্তশূন্যতা দূর করে
-
হজম শক্তি বাড়ায়, হজম করতে সাহায্য করে
- হাড় মজবুত এবং শক্তিশালী করে তোলে
- ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
-
ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগ এর ঝুঁকিকমায়
-
বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
কিসমিস একটি উপকার । এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং পুষ্টি
। যা দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং শরীরের উপকার করতে
সাহায্য করে । প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী পরিমাণ মতো কিসমিস খেলেই পাওয়া যাবে
সঠিক সমাধান । চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
।
-
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ৬ থেকে ৭ টি কিশমিশ ভিজে রাখবেন । তারপর সকালে উঠে
সেগুলো খালি পেটে খেয়ে নিবেন ।
-
সকালের নাস্তা হিসেবে পানির সাথে কিসমিস খাওয়া যেতে পারে । এতে করে পেট
ভরা থাকবে ।
-
খেলাধুলো বা ব্যায়াম করার পর কিসমিস খেতে পারেন । এতে করে তাৎক্ষণিক
শক্তি বৃদ্ধি পাবে ।
-
ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে এবং তার সাথে ঘি একত্রে খেতে পারেন ।
-
এছাড়াও যেকোনো সময় খালি পেটে কিসমিস খেতে পারেন । এতে করে অনেক
উপকার পাওয়া যাবে ।
কাচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কাঁচা বাদাম খাওয়া বেশি উপকারী নাকি ভাজা বাদাম
খাওয়া বেশি উপকারী । পুষ্টি ও ভিটামিন এর দিক দিয়ে কাঁচা বাদাম সবচেয়ে
বেশি উপকারী । কাঁচা বাদামে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি ও ক্যালরি পাওয়া যায়
। যা শরীরে শক্তি উৎপাদন করতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে
সহায়তা করে ।
নিয়মিত কাঁচা বাদাম খাওয়ার ফলে অনেক উপকার পাওয়া যায় । তার
মধ্যে কয়েকটি উপকারিতা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে । যে সকল
উপকারিতা গুলো এখানে তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হলোঃ
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি । বড় বড় বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত কাঁচা
বাদাম খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ।
-
অনেকের রক্তশূন্যতার সমস্যা দেখা যায় । এ রক্তশূন্যতার সমাধান পেতে
নিয়মিত খাওয়া উচিত । কাঁচা বাদাম রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে
।
-
কাঁচা বাদাম খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে । এবং ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
-
দেহের যেকোনো ব্যাথা থেকে নিরাময় পেতে কাঁচা বাদাম খেতে পারেন ।
-
কাঁচা বাদামে অনেক পুষ্টি পাওয়া যায় । যা বাদাম ভাজলে সেগুলো আর
পাওয়া যায় না ।
লেখক এর শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগণ এ আর্টিকেলটিতে ছোলা বাদাম কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা বিস্তারিত তুলে
ধরার চেষ্টা করেছি । এবং প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত সে সম্পর্কেও
বিস্তারিত আলোচনা করেছি । আশা করছি আর্টিকেলটি পরে নিশ্চয় উপকৃত হয়েছেন
। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন
।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url