ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ কতদিন
প্রিয় পাঠক ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ কতদিন জানতে চাচ্ছেন ? হয়তো সঠিক তথ্য কথা খুঁজে পাচ্ছেন না । তাহলে এ আর্টিকেলটি আপনার জন্যই । এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । এর সকল বিষয়ে জানতে সম্পন্ন আর্টিকেলটি মন দিয়ে পড়ুন ।
বর্তমানে যে কোন গাড়ি চালানোর জন্য একটা গাড়িচালকের লাইসেন্স থাকতে হয় । লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে তাকে অবৈধভাবে গাড়ি চালানো বলে । কারণ বাংলাদেশ সরকার গাড়ি চালানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট লাইসেন্স এর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ।
ভুমিকা
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার মূলত কারণ হলো যে একজন গাড়িচালক যখন গাড়ি চালায় তখন
সেটা তার পরিচয় বহন করে । যে সে একজন গাড়ি চালক কিনা । কারণ যদি সে
ভালো গাড়ি চালক না হয় তাহলে কিন্তু গাড়ি চালানোর সময় যে কোন বিপদ ঘটতে পারে
। সেজন্য একজন গাড়িচালকের পরিচয় বহন করার জন্য মূলত এই ড্রাইভিং লাইসেন্স
করা হয় ।
অনেক মানুষ রয়েছে যারা শুধু দেশে নয় দেশের বাইরেও থাকে অথবা ড্রাইভিং সেক্টরে চাকরি
করে । তাদের জন্য মূলত ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করা লাগে
। কারণ এক দেশের লাইসেন্স দিয়ে অন্য দেশে গাড়ি চালানোটা অবৈধ
। এজন্যই ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করা হয় ।
ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ কতদিন
যে সকল মানুষগুলো এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে ড্রাইভিং সেক্টরে চাকরি
করে তাদের জন্য সেই দেশের অর্থাৎ যে দেশে বর্তমান ড্রাইভিং চাকরি করছে
সেখানকার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হয় । কারণ যে দেশে
ড্রাইভিং চাকরি করবেন সে দেশের সরকার ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স কে
একটি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হিসেবে নির্ধারণ করেছেন ।
এই ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মাধ্যমে দেশে এবং দেশের বাইরের যে কোন
দেশে গাড়ি চালানো সম্ভব । কারণ যদি আপনার কাছে ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং
লাইসেন্স থাকে তাহলে আপনাকে কোথাও কেউ এ বিষয়ে যারা করতে পারবে না
। এই ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মাধ্যমে আপনি যেকোনো জায়গায় যে কোন গাড়ি
চালাতে পারবেন নিঃসন্দেহে ।
তবে একটা শর্ত যে এটা শুধু ড্রাইভিং এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । অন্য কোন
লাইসেন্স অথবা গাড়ির মেইন লাইসেন্স এর জন্য কিন্তু ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রযোজ্য
করা হয় না । শুধুমাত্র যিনি গাড়ি চালাবেন তার জন্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স করা
হয় । তাই গাড়ি চালানোর আগে অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স করে নিতে হবে
।
একটি ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্সের সাধারণত IDP পাওয়ার পর প্রায় ৬ মাস
পর্যন্ত এটা ব্যবহার করা যায় । এই ৬ মাস মেয়াদে ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং
লাইসেন্স দিয়ে বিশ্বের ১৮০ টি দেশে গাড়ি চালানো সম্ভব । এটার মেয়াদ
৬ মাস উত্তীর্ণ হয়ে গেলে আবার নতুনভাবে ( রিনিউ অথবা নবায়ন ) করে গাড়ি
চালাতে পারবেন ।
আরও পড়ুন ঃ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তারিত
ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম
যে কোন কিছু করার জন্য এবং করতে তার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অবলম্বন করে চলতে হয়
। আর নিয়ম মেনে চললে কাজটা করার সহজ হয় এবং সম্ভাব হয় । তার
পরিবর্তে যদি নিয়ম না মেনে কোন কাজ করা হয় তাহলে সে কাজটা ঠিক ঠাক ভাবে সম্পন্ন
করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা । তেমনি ভাবে ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স
করারও নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন রয়েছে ।
সেই নিয়ম কানুন গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন । ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং
লাইসেন্স করার নিয়ম হলো যখন আপনি ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করবেন তখন
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যে ড্রাইভিং লাইসেন্স টি রয়েছে অথবা বাংলাদেশের
অভ্যন্তরীণ একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে ।
তারপর সেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ লাইসেন্স অনুযায়ী ইন্টারন্যাশনাল
লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে । এটা আবেদন করা হয় বাংলাদেশ মোবাইল
এসোসিয়েশনে । এই ইন্টারন্যাশনাল লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
এবং ডকুমেন্টস পারমিট করতে হবে । এবং প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করতে হবে
।
তারপর আবেদন করা হয়ে গেলে আবেদন করার ১৫ দিনের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান
করা হয়ে থাকে । যদি আপনার লাইসেন্স রেডি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই তারা
আপনাকে ডেকে নিবে । এবং সেখান থেকে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ইন্টারন্যাশনাল
লাইসেন্স টি সংগ্রহ করে নিতে পারবেন ।
ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যা যা লাগে
একটি ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার মূলত কারণ হলো আপনি আপনার দেশ থেকে
বাইরের যে কোন দেশে গাড়ি চালাতে পারবেন । এ বাইরের যে কোন দেশে গাড়ি
চালানোর জন্যই ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করা হয় । তো এই
ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য কিছু কাগজপত্র এবং ডকুমেন্টস লাগে
।
কি কি ডকুমেন্ট লাগে সেগুলো এখানে উল্লেখ করা হয়েছে । ইন্টারন্যাশনাল
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যে সকল ডকুমেন্টস গুলো লাগে সেগুলো হল ঃ
-
ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য BRTA তে গিয়ে ড্রাইভিং
লাইসেন্সের অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি পূরণ করতে হবে । অথবা অনলাইনেও এটার ফরম
পূরণ করা যায় মোবাইল এর এসোসিয়েশন এর মাধ্যমে ।
-
যিনি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবেন সেই আবেদনকারীর ৪ কপি ছবি জমা দিতে
হবে । ছবিগুলোর মধ্যে ৩ কপি ছবি হতে হবে স্টাম্প সাইজের এবং
১ কপি ছবি হবে পাসপোর্ট সাইজের ।
-
লাইসেন্স এর জন্য পূর্বের সংগ্রহ করা বিআরটি কর্তৃক ড্রাইভিং লাইসেন্সের
সত্যায়িত কপি জমা করতে হবে ।
-
ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য পাসপোর্ট এর ফটোকপি জমা দিতে হবে
।
-
ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স এর একটি আবেদন কি রয়েছে ।
২৫০০ টাকা আবেদন ফি হিসেবে জমা দিতে হবে ।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে
-
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য একটি নির্ধারিত ফরম থাকে সেটা পূরণ করতে হবে
। চাইলে আপনি অনলাইনে এই ফর্মটি পূরণ করতে পারেন ।
-
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার জন্য ছবি জমা দেওয়া লাগে । [ ছবির সাইজ
সর্বোচ্চ ১৫০ কেবি হতে হবে ]
-
রেজিস্টার ডাক্তারের থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে সেটা জমা দিতে হবে
।
-
জাতীয় পরিচয় পত্রের স্ক্যান কপি জমা দিতে হবে ।
-
ইউটিলিটি বিলের স্ক্যান কপি দিতে হবে ।
-
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা দিতে হবে ।
-
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে ।
-
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে
।
-
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেশাদার কিংবা অপেশাদার যেটাই করেন না কেন তার জন্য অবশ্যই
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগবে ।
-
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন ফি ১৬৮০ টাকা এবং অপেশাদার ড্রাইভিং
লাইসেন্স এর আবেদন ফি ২৫৪২ টাকা জমা দিতে হবে । এই টাকাটা
বিআরটিএর নির্ধারিত করা ব্যাংকে জমা দিয়ে সেটার রশিদ সংগ্রহ করে জমা
দিতে হবে ।
-
সর্বশেষ যে কাজটি সেটা হল প্রয়োজনে সকল কাগজপত্র জমা করে সেগুলো ঠিকঠাকভাবে
রেডি করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে ।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম
-
যাদের পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করা আছে তাদের জন্য পুনরায় একটি ড্রাইভিং এর
প্র্যাকটিক্যাল ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে হবে ।
-
এটা শুধু পেশাদারদের জন্য কার্যকর অপেশাদার দের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়
।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স এর নবায়ন ফরম পুরন করতে হবে ।
-
বিআরটি এর এর নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট কাগজপত্র সহ ফর্মটি পূরণ করে
জমা দিতে হবে ।
-
আপনার কাগজপত্র সমস্ত কিছু ঠিক থাকলে আপনাকে একটি বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান
করতে হবে । এই বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়ার জন্য বিআরটিএর নির্দিষ্ট
স্থানে গিয়ে ছবি, আঙ্গুলের ছাপ ও স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে ।
-
এবার সমস্ত কিছু ঠিকঠাক ভাবে জমা দেওয়া হয়ে গেলে স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং
লাইসেন্স প্রিন্ট করা শেষ হয়ে গেলে বিআরটি থেকে আপনার ফোনে একটি এসএমএস যাবে
। এটা নবায়ন করার এসএমএস আপনার ফোনে যাবে । তারপর আপনাকে বি
আর টি তে গিয়ে নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url