২৬ শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করা হয় কবে
প্রিয় পাঠক আপনি হয়তো ২৬শে মার্চ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করছেন । কিন্তু কোথাও তেমন তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না । তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য । এই আর্টিকেলে ২৬ শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করা হয় কবে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করা হয় কোথা থেকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ।
আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ২৬ শে মার্চ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন । আপনি যদি জানতে চান যে ২৬ শে মার্চ কি দিবস তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনি শুরু থেকে মনোযোগ সহকারে পড়ুন ।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ এই পোস্ট থেকে যে অংশ পড়তে চান নিচে ক্লিক করুন ।
- ভূমিকা
- ২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে
- বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয় কোথা থেকে
- বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কে
- স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য
- ২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস
- শেষ কথা
ভূমিকা
২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে
২৬ শে মার্চ বাঙালি জাতির একটি গর্বের দিন । এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমস্ত বাঙালি জাতির সামনে ২৬ শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন । এই স্বাধীনতা দিবস অর্জনের জন্য ৩০ লক্ষ প্রাণের বিসর্জন ঘটেছে । ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এবং কঠোর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম বাংলাদেশ ।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ এদেশের মানুষের উপর পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী নিরস্ত্র অত্যাচার শুরু করেন । ২৫ শে মার্চ কে কালো রাত বলা হয় । এর কারণ হলো ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে বাঙালি জাতির উপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় ।
সেই রাতে বাঙালি জাতির অনেক প্রাণের অবসান ঘটে । নির্মমভাবে বাঙালির ওপর অত্যাচার শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী । এদেশের তরুণ ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, ডাক্তার, অনেক চাকুরীজীবী, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন পেশার মানুষের উপর অত্যাচার করা হয় । এবং তাদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় । এই ঘটনার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাগান্বিত হয়ে পড়েন ।
আরও পড়ুন ঃ ৭ মার্চের ভাষণের মূল বিষয়বস্তু কয়টি
এরপর ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা বাঙালি জাতের সামনে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন ।এ ঘোষণার পর ছাত্র-ছাত্রী, কৃষক, শিক্ষক, ডাক্তার এবং বিভিন্ন চাকরিজীবী সহ মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান জাতি নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে । এরপর দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ চলতে থাকে পাকিস্তানে হানাদার বাহিনীদের সাথে ।
দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করার পর ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এবং বিভিন্ন পেশাদার মানুষের এবং ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি জাতির বিজয় লাভ হয় । এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন বাংলাদেশ । এজন্য ২৬ শে মার্চ কে কেন্দ্র করে প্রতিবছর সারাদেশে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয় ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয় কোথা থেকে
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসের ঘোষণা পত্র বলতে বোঝায় ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার কর্তৃক অনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষিত একটি পত্রকে । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন । যেখান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয় তা হলো মুজিবনগর সরকার কর্তৃক ।
এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ঘোষণা করা হয় স্বাধীনতা বাংলার বেতার কেন্দ্র থেকে । বাঙালি জাতির ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চলার পথ বাংলাদেশের মুজিবুর রহমান এর নির্দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র সর্বপ্রথম ঘোষণা করা হয় । আর এর পরিপ্রেক্ষিতে সারা বাংলার মানুষ স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে জানতে পারে ।
এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথম বাংলার মুক্তি বাহিনী এবং বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেওয়া হয় । এবং তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে বেতার কেন্দ্র থেকে সারা বাংলাদেশে প্রচার করা হয় । পরবর্তীতে এ দুটি সংগঠন বেতার কেন্দ্র থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারিত হয় ।
এই প্রচারটা ছিল ১০ কিলোওয়াট এর । যা ৬০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রচারিত হতে সক্ষম হয়েছিল । এ কারণে পুরো দেশের জনগণ এই ঘোষণা শুনতে পায় এবং সে বিষয়ে জানতে পারে । এই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা , আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কে
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করা হয়েছিল বাংলাদেশের মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ।স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রথম পাঠ করা হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে । এ ঘোষণা পত্রটি পাঠ করেছিলেন এম এ হান্নান । তৎকালীন সময়ে তিনি চট্টগ্রাম জেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় । সে রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা বাঙালির ওপর কঠোর অত্যাচার শুরু করে । এবং সে ঘটনাস্থলে অনেকে মৃত্যুবরণ করেন । তার মধ্যে ছিল বিভিন্ন পেশার মানুষজন । ছিল ছাত্র, পুলিশ, শিক্ষক , ডাক্তার, কৃষক সহ আরো বিভিন্ন পেশার মানুষ ।
আরও পড়ুন ঃ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পটভূমি
দেশের জন্য তাদের এই কঠোর আত্মত্যাগ চিরদিন ইতিহাসের পাতায় উজ্জীবিত হয়ে থাকবে । এরপর ২৬ শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুজিবনগর সরকার কর্তৃক স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করা হয় । আর সেই ঘোষণা পত্রটি পাঠ করেছিলেন তখনকার চট্টগ্রাম জেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই কঠোর নির্দেশ এবং বাঙালি জাতির কঠোর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ । ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আজ আমরা এক স্বাধীন জাতি হিসেবে পরিচিত । আমাদের সকলের উচিত বাঙালি জাতির সেই মহান দিনগুলোকে চির স্মরণে রাখা । এবং প্রতিবছর শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত করা ।
স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য
- সারা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে সম্বোধন করে প্রতিবছর ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় । এ পতাকাটি উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ।
- প্রতিবছর ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে উপলক্ষে সারা দেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে । এবং টেলিভিশন, মোবাইল ফোন এবং রেডিওতে আমরা স্বাধীনতার ভাষণ এবং বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান উপভোগ করি ।
- সারা বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে যে কোন প্রতিষ্ঠানে স্বাধীনতা দিবসকে স্মরণ করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় ।
- ছোট বড় সকলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধা জানাই । এবং এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে থাকে ।
- ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ইতিহাসের পাতায় চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে । এবং স্বাধীনতা দিবসের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক বিজয়ের সূচনা ঘটে ।
২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস
শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগণ এ আর্টিকেলটিতে ২৬ শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করা হয় কবে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয় কোথা থেকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি । আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে । এবং আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পেরেছেন ।
আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে আশা করি আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেয়েছেন । যদি এ আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লাগে কিংবা এখান থেকে যদি কোন উপকার পেয়ে থাকেন তাহলে তা অবশ্যই অন্যের কাছে শেয়ার করবেন । এবং ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে সকলকে জানতে উৎসাহিত করবেন ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url