প্রতিদিন কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত
প্রিয় পাঠক খেজুর হলো একটি সুন্নতি খাবার । আপনি যদি জানতে চান যে প্রতিদিন
কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত তাহলে এ আর্টিকেলটি আপনি পড়তে পারেন । এ
আর্টিকেলে প্রতিদিন কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করা হয়েছে । এবং খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা
হয়েছে ।
খেজুর একটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং উপকারি খাবার । খেজুরের পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে যদি জেনে না থাকেন তাহলে এ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে খেজুর সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারবেন ।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ এই পোস্ট থেকে যে অংশ পড়তে চান সেখানে ক্লিক করুন ।
- ভূমিকা
- প্রতিদিন কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত
- খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- ঘুমানোর আগে খেজুর খেলে কি হয়
- দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
- খেজুর খাওয়ার অপকারিতা
- শেষ কথা
ভূমিকা
উপকারী এই খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের অনেক উপকার পাবেন
। এছাড়াও অনেক রোগ থেকে নিরাময় পেতে আপনি খেজুর খেতে পারেন
। কারণ খেজুরের যে পুষ্টি এবং ভিটামিন রয়েছে তা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি
পেতে সাহায্য করে । এজন্য আপনার জানা উচিত প্রতিদিন কিভাবে এবং কয়টি করে
খেজুর খাবেন ।
খেজুরের উপকার উপভোগ করার জন্য আপনার উচিত নিয়ম অনুযায়ী খেজুর খাওয়া । এ
আর্টিকেলটি পড়লে আপনি খেজুর খাওয়ার নিয়ম এবং প্রতিদিন কয়টি খেজুর খাবেন সে
সম্পর্কে সকল কিছু জানতে পারবেন । তো চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক
খেজুর সম্পর্কে কিছু তথ্য ।
প্রতিদিন কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত
খেজুরের পুষ্টি ও গুনাগুন সম্পর্কে হয়তো অনেকে জানে আবার অনেকে জানে না
। এই খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায় । তবে
খেজুর আমরা তেমনভাবে খাই না । এর মূল কারণ হলো খেজুরের যে পুষ্টি ও গুনাগুন
রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের সঠিক জ্ঞান বা সঠিক ধারণা নেই ।
আরও পড়ুন ঃ কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন
বিশেষ করে রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা এসব থেকে বেশি হয় । কারণ প্রতিটি
মুসলিম ঘরে ঘরে খেজুর দিয়ে ইফতার করা হয় । এছাড়াও এমনও অনেক মানুষ রয়েছে
যারা নিয়মিত খেজুর খেয়ে থাকে । কারণ তারা জানে যে এর উপকারিতা কি কি
এবং এর পুষ্টি ও গুনাগুন কতটুকু । আপনিও এই আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পারবেন
খেজুরের পুষ্টি ও গুনাগুন এবং কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত ।
খেজুরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি থাকে , যেমন খেজুরে থাকে
তামা, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে এই খেজুরে
। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ থেকে নিরাময় পেতে এবং মুক্তি পেতে সাহায্য
করে । এছাড়াও শরীরের ক্যালসিয়াম তারপর আয়রন এছাড়াও যে সকল ভিটামিনের
অভাব থাকে সেগুলো পূরণ করে দেয় ।
একজন মানুষের প্রতিদিন ৪ টি থেকেতি৫ টি খেজুর খাওয়া উচিত । চারটি থেকে
পাঁচটি খেজুর খেলে একজন মানুষের পক্ষে যথেষ্ট হয়ে যাবে । কারণ এই ৪ - ৫ টি
খেজুরের মধ্যে পরিমাণ মতো পুষ্টি এবং ক্যালোরি পাওয়া যায় । যা আমাদের
শরীরের জন্য যথেষ্ট । ৪ থেকে ৫ টি খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে আপনি পাবেন ২৭৭
গ্রাম ক্যালোরি ।
তবে আমরা দিনে অনেক গুলো খেজুর খেয়ে ফেলি । আসলে এটা মোটেও ঠিক না
। কারণ অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না । অতিরিক্ত খেজুর খেলে উপকারের
পরিবর্তে অপকার মিলতে পারে । এজন্য উচিত প্রতিদিন ৪ থেকে ৫
টি খেজুর খাওয়া । তাহলে এর মানসম্মত এবং পরিমাণ মতো পুষ্টি এবং
ভিটামিন পাওয়া যাবে ।
খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
আমরা সুস্বাদু এবং মিষ্টি এই খেজুর সকালে চিনি বা খেয়ে থাকি
। কিন্তু আমরা যখন খেজুর খায় তখন শুকনা পানি দিয়ে ধুয়ে খেয়ে ফেলি
। অথবা অনেক সময় এমন হয় যে না ধুয়েও খেজুর খেয়ে ফেলি । কিন্তু আসলে
যে কোন জিনিস না দেখে খাওয়াটা উচিত নয় । কারণ এতে অনেক ময়লা মাটি লেগে
থাকতে পারে, যা থেকে রোগব্যাধির সৃষ্টি হতে পারে ।
আমরা যখন খেজুর খায় তখন শুকনাই খেয়ে ফেলি । কিন্তু আপনি যদি খেজুর ভিজিয়ে
খান তাহলে কিন্তু অনেক উপকার পাবেন । খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার বিষয়টা হয়তো
সকলেই জানে না । কিন্তু খেজুর যদি নিয়মিত ভিজিয়ে খাওয়া যায় তাহলে এর
থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায় । আপনি যদি খেজুরের স্বাদ এবং এর থেকে উপকার
পেতে চান তাহলে খেজুর ভিজিয়ে খেতে পারেন ।
আরও পড়ুন ঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে কেক বানানোর উপায় বিস্তারিত জেনে নিন
প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেজুর ভিজিয়ে রেখে তা সকালে উঠে খালি পেটে খেয়ে
নিতে হবে । অন্ততপক্ষে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা আপনি খেজুর ভিজিয়ে রাখতে পারেন
। ভিজিয়ে খেজুর খাওয়ার কারণে আপনার অনেকক্ষণ পেট ভর্তি থাকবে । ঘন ঘন
ক্ষুধা লাগবেনা এবং ঘন ঘন ক্ষুধা লাগার যে অভ্যাসটা থাকে মানুষের তা দূর হয়ে
যাবে । খেজুর ভিজে খাওয়ার যে উপকারিতা গুলো রয়েছে ঃ
- শরীর ফুরফুরে এবং সারাদিন শরীর সতেজ রাখতে সাহায্য করে ।
- ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা বন্ধ হবে ।
-
অতিরিক্ত ওজন কমতে সাহায্য করে ।
- খাবারের রুচি বৃদ্ধি পায় ।
-
বদ হজম হওয়া থেকে বিরত রাখে ।
-
এবং খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে নিরাময় পাওয়া যায় ।
ঘুমানোর আগে খেজুর খেলে কি হয়
খেজুর একটি অত্যন্ত উপকার খাবার । যা দেহের জন্য খুবই উপকারী
। এই খেজুর যদি কেউ নিয়মিত খায় তাহলে এর থেকে অনেক পুষ্টি এবং ভিটামিন
পাওয়া যায় । যা দেহের যে সকল ভিটামিনের ঘাটতে থাকে তা পূরণ করতে সাহায্য
করে । যদি ঘুমানোর আগে খেজুর খাওয়া যায় তাহলে এর থেকে কি উপকার পাওয়া
যায় ?
রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত কেউ যদি খেজুর খায় তাহলে সারারাত ঘুম ভালো হয়
। কারণ খেজুরে যে সকল ভিটামিন থাকে তা রাতে ভালোভাবে ঘুম সাহায্য করে
। এবং নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে শরীর সতেজ থাকে এবং শরীর থেকে ফুরফুরে
। যার কারণে সারাদিন মন ফ্রেশ থাকে এবং যেকোনো কাজ করতে আগ্রহ জাগে
।
এবং আপনি যদি দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খান তাহলে এর থেকেও অনেক উপকার পাবেন
। কারণ আমরা সকলে জানি একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার । দুধের সকল ধরনের
ভিটামিন পাওয়া যায় । যাদের জন্য খুবই উপকারী । এজন্য আপনি চাইলে
দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন । দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হয়েছে ।
দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
দুধ যে একটি উপকারী খাবার তা কিন্তু সকলের অজানা নয় । সকলে জানে যে দুধে
প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং ক্যালোরি থাকে । যা শরীরের অনেক উপকার করে এবং
বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে । তবে যদি আপনি দুধের সাথে খেজুর
মিশিয়ে খান তাহলে কি উপকার পাওয়া যাবে ?
হ্যাঁ, দুধ ও খেজুর এক সঙ্গে মিশিয়ে খেলে অবশ্যই তা থেকে উপকার পাওয়া যাবে
। চলুন কি কি উপকার পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জেনে নিই ।
- দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাবে
-
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে
-
ত্বক সুন্দর এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করবে
- পরিপূর্ণভাবে ঘুম হতে সাহায্য করবে
- মন খারাপ দূর হবে
- খাবারের রুচি বৃদ্ধি পাবে
- শরীরের রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে
-
এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে ।
খেজুর খাওয়ার অপকারিতা
খেজুর একটি উপকারী খাবার । তবে এর সামান্য অপকারিতা রয়েছে । যেকোনো
জিনিস সীমার বাইরে করা একদমই উচিত নয় । সেটা যে কোন কাজ কাম হোক অথবা
খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে । যদি অতিরিক্ত কেউ খেয়ে ফেলে তাহলে কিন্তু সেটা
বদহজম হয়ে যায় । ঠিক তেমনি পরিমাণ এর চেয়ে বেশি খেজুর খেলে তার থেকে
উপকারের পরিবর্তে অপকার পাওয়া যাবে ।
খেজুর উপকারী খাবার ঠিক আছে, তবে তা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া যাবেনা
। অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিবে । এর কারণ
হলো খেজুর একটি মিষ্টি জাতীয় খাবার । এছাড়া যে সকল মানুষের দেহে পটাশিয়াম
বেশি তাদের অতিরিক্ত মাত্রায় খেজুর খাওয়া উচিত নয় ।
এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে কেউ যদি খেজুর খায় তাহলে তার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে
। কারণ খেজুর ওজন বৃদ্ধি করতে সক্ষম । তবে যদি কেউ মাত্রাতিরিক্ত খেজুর
খায় তাহলে তা ওজন বৃদ্ধি করতে দ্রুত কাজ করবে । তবে যদি কেউ নিয়ম মেনে
পরিমান মত খেজুর খায় এতে করে ওজন বৃদ্ধির পরিবর্তে ওজন কমে ।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন খেজুরের উপকারিতা গুলো কি কি । এজন্য যখন খেজুর খাবেন
তখন নিয়ম মেনে পরিমান মত খাবেন । কারণ উপকারের জন্য অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া
মোটেও উচিত নয় । যদি উপকার পেতে চান তাহলে নিয়ম অনুযায়ী খেজুর খাবেন
।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলটিতে প্রতিদিন কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত এবং খেজুর
ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি । আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে
আপনার ভালো লেগেছে । এ আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই
অন্যের কাছে শেয়ার করবেন । এবং খেজুর সম্পর্কে অন্যদের জানতে সাহায্য করবেন
।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url