কোন ভিটামিনের অভাবে কি রোগ হয় বিস্তারিত যেনে নিন
ভিটামিনের অভাবে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে । আমাদের জেনে থাকা প্রয়োজন কোন ভিটামিনের অভাবে কি রোগ হয় সে বিষয়ে । আপনি যদি এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে এ আর্টিকেলটি থেকে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন ।
প্রতিটি মানবদেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিনের প্রয়োজন । দেহে যদি
ভিটামিনের ঘাটতি দেখা যায় কিংবা দেহে যদি ভিটামিনের ঘাটতি থেকে
যায় তাহলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি । তাই আমাদের জেনে নেওয়া
উচিত ভিটামিনের অভাবে কোন কোন রোগ গুলো হয়ে থাকে ।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ এই পোস্টের যে অংশ পড়তে চান নিচে ক্লিক করুন ।
- ভূমিকা
- কোন ভিটামিনের অভাবে কি রোগ হয়
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন বি
- ভিটামিন সি
- ভিটামিন ডি
- ভিটামিন ই
- ভিটামিন কে
- কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়
- মানুষের শরীরে কত ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায়
- শেষ কথা
ভূমিকা
ভিটামিন এমন একটি বস্তু যার অভাবে প্রত্যেকটি জীব প্রত্যেকটি
প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে । যেমন একটি গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে
সার, পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন না পাই তাহলে সে গাছটা দ্রুত
বেড়ে ওঠে না । ঠিক তেমনি মানবদেহে ভিটামিনের
অভাবে মানুষের ক্রমবিকাশে বাধা পায় এবং নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে
পড়ে ।
তাই আমাদের ভিটামিনের গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে থাকা অত্যন্ত জরুরি । এবং সব
সময় আমাদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন রাখা প্রয়োজন । আজকের এই
আর্টিকেলটি থেকে এই সকল বিষয়ে জানতে পারবেন । এবং আরো জানতে
পারবেন কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় এবং মানুষের শরীরে কত ধরনের ভিটামিন
পাওয়া যায় ।
কোন ভিটামিনের অভাবে কি রোগ হয়
কোন ভিটামিনের অভাবে কোন রোগ হয় তা কিন্তু আমরা বুঝতে পারি না । অনেক সময়
আমরা অসুস্থতার অসুস্থতার কারণ খুঁজে পাই না । আবার অনেকে মনে করেন যে ভিটামিনের
অভাবে আবার অসুস্থ হয় নাকি ? তবে অসুস্থতার মূল কারণ হলো ভিটামিনের
অভাব । মানুষের শরীরে যখন ভিটামিনের অভাব হয় তখন মানুষ নানান ধরনের রোগের
সম্মুখীন হয় ।
আমাদের জেনে থাকা উচিত যে ভিটামিনের অভাবে কি কি রোগ হয় এবং কেন হয় । তো
চলুন জেনে নিই আজকের মূল বিষয় সম্পর্কে ।
ভিটামিন এ
ভিটামিন এ হলো প্রতিটি প্রাণীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান
। ভিটামিন এ এর একটি গুণ হল এটি চর্বিত দ্রবণীয়
। অর্থাৎ চর্বিতে বা চর্বি জাতীয় যে সকল খাবার রয়েছে
সে সকল খাবারে ভিটামিন এ পাওয়া যায় । ভিটামিন এ এর রাসায়নিক নাম হল
' রেটিনাল ' । ভিটামিন এ পরিচিত একটি ভিটামিন । যা প্রতিটি
বাচ্চাকে জন্মের পর প্রদান করা হয় ।
ভিটামিন এ এর উৎস
যে সকল খাবারে ভিটামিন এ পাওয়া যায় সেগুলোকেই ভিটামিন এ এর উৎস বলা হয়
। অর্থাৎ যে সকল খাবারের মধ্যে ভিটামিন এ এর উপাদান বিদ্যামান
রয়েছে সে সকল খাবার খেয়ে ভিটামিন এ এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে
। যেমন ঃ গাজর, আম, দুধ, পেঁপে, রঙা আলু
, টমেটো
, কুমড়া, জাম্বুরা, লেটুস, বাঁধাকপি, পালং
শাক, মিষ্টি আলু ইত্যাদি শাকসবজি-ফলমূলে ভিটামিন এ পাওয়া
যায় ।
আরও পড়ুন ঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগ
ভিটামিন এ এর অভাবে সব থেকে বেশি যে রোগটি দেখা যায় তা হলো
রাতকানা রোগ । রাতের বেলা চোখে সঠিকভাবে দেখতে না পাওয়া, কম আলোতে
দেখতে না পাওয়া, ত্বকের সমস্যা যেমন শুষ্ক, খসখসে এবং ত্বক রুক্ষ হয়ে
যায় । এবং শরীরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি থাকলে রক্তস্বল্পতা
দেখা দেয় । এছাড়াও ভিটামিন এ এর অভাবে ত্বকের উপর বিভিন্ন প্রভাব
পড়ে ।
ভিটামিন বি
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর অনেকগুলো উৎস রয়েছে
। অনেকগুলো সংমিশ্রণে ভিটামিন বি গঠিত । সে সংমিশ্রণ
গুলো হল ( ভিটামিন বি ১ ), ( ভিটামিন বি ২ ),
( ভিটামিন বি ৩ ), ( ভিটামিন বি ৫ ), ( ভিটামিন বি ৬ ),
( ভিটামিন বি ১২ ), ( ভিটামিন বি ৭ ), ( ভিটামিন বি৯) এই সকল উপাদান নিয়ে
সম্পূর্ণ ভিটামিন বি গঠিত । মানব দেহের জন্য ভিটামিন বি অত্যন্ত জরুরী এবং
প্রয়োজনীয় ।
ভিটামিন বি ১
ভিটামিন বি ১ হল " থায়ামিন " । এই ভিটামিন পাওয়া
যায় গোটা শস্য থেকে, মটরশুঁটি থেকে এবং মাংস থেকে । এই
ভিটামিনের অভাবে বেরিবেরি রোগ হয়ে থাকে । এ রোগ থেকে বেঁচে থাকতে
আমাদের অবশ্যই ভিটামিন বি ১ এর খাবার গুলো নিয়মিত গ্রহণ করা উচিত
।
ভিটামিন বি ২
ভিটামিন বি ২ হল " রাইবোফ্ল্যাভিন " । ভিটামিন বি ২ এর উৎস গুলো হল দুগ্ধজাত দ্রব্য , চরবিহীন মাংস এবং সবুজ শাকসবজি । এই সকল খাবারের ভিটামিন বি ২ এর পুষ্টি উপাদান বিদ্যামান রয়েছে । এই ভিটামিন ২ এর অভাবে ত্বকের বিভিন্ন রোগ, হাইপারেমিয়া ও মুখের ঘা সহ মুখে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে ।
ভিটামিন বি ৩
ভিটামিন বি ৩ হলো "নিয়াসিন " । ভিটামিন বি ৩ এর উৎস গুলোর
মধ্যে রয়েছে , মাছ, মাংস, মাশরুম এবং চিনা বাদাম । এই
সকল খাবারে ভিটামিন বি ৩ এর পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান
। ভিটামিন বি ৩ এর অভাবে পেলেগ্রা রোগ হতে পারে
।
ভিটামিন বি ৫
ভিটামিন বি ৫ হলো " প্যান্টোথেনিক এসিড " । ভিটামিন বি ৫ এর
উপাদান গুলো হলো মাংস, সবুজ শাকসবজি, গোটা শস্য ইত্যাদি
। এ সকল খাবারে ভিটামিন বি ৫ পাওয়া যায় । ভিটামিন বি ৫ এর
অভাবে ক্লান্তি ভাব, অনিদ্রা, বিষন্নতা, বমি বমি ভাব সহ আরো
অনেক সমস্যা হতে পারে । তবে ভিটামিন বি এর অভাবজনিত রোগ বিরল
।
ভিটামিন বি ৬
ভিটামিন বি ৬ হলো " পাইরি ডক্সিন " । এই ভিটামিন বি ৬ পাওয়া
যায় ছোলা, মুরগি এবং মাছের মধ্যে । ভিটামিন বি
৬ এর অভাবে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং দেহের রক্ত থেকে লোহিত
রক্ত কণিকার পরিমাণ কমে যায় । এবং আরো একটি রোগ দেখা যায় সেটি হল
অ্যানিমিয়া ।
ভিটামিন বি ৭
ভিটামিন বি ৭ হলো " বায়োটিন " । ভিটামিন বি ৭ পাওয়া
যায় বাদাম, ডিম এবং মিষ্টি আলুতে । বাদাম, ডিম ও
মিষ্টি আলুর মধ্যে ভিটামিন বি ৭ এর পুষ্টি উপাদান রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে
। ভিটামিন বি ৭ এর অভাবে অন্ততকের সমস্যা দেখা দেয় এবং চুল
ওঠা রোগ হয়ে থাকে ।
ভিটামিন বি ৯
ভিটামিন বি ৯ হলো " ফলিক অ্যাসিড " । এর উপাদান গুলো পাওয়া যায় শাকসবজিতে এবং শক্তিশালী সিরিয়াল খাবারের মধ্যে । এই ভিটামিন এর অভাবে মেগালোব্লাস্টিক অ্যানিমিয়া ও গর্ভাবস্থায় নিউরাল টিউব ত্রুটি গুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকে ।
ভিটামিন বি ১২
ভিটামিন বি ১২ হলো " কোবালামিন " । এই ভিটামিন এর উৎস হল মাছ, , মাংস, দুগ্ধ জাতীয় খাবার এবং দুর্গযুক্ত খাবার । ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় এবং স্নায়বিক নানা রকম সমস্যা হয়ে থাকে ।
ভিটামিন সি
ভিটামিন সি এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট এসিড । যা জলে দ্রবণীয়
এবং এটি প্রতিটি প্রাণীর নির্দিষ্ট বিপাকীয়
প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত । ভিটামিন সি মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে । ভিটামিন
সি এর সংশ্লেষণে অপরিহার্য কোলাজেন । যা একটি সংযোজক টিস্যু
তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
ভিটামিন সি মানব দেহে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে
এবং মানবদেহের প্রতিক্রিয়াশীল অনু গুলোর দারা দেহের
ক্ষতিকর পদার্থের বিরুদ্ধে লড়াই করে । এছাড়াও দেহের ইমিউন
সিস্টেমকে সঠিক ও উদ্দীপিত করে তুলতে সহায়তা করে । মানব দেহের
বিভিন্ন রোগের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ভিটামিন সি ব্যবহার করা হয় ।
ভিটামিন সি এর উৎস
ভিটামিন সি এর উৎস হল টক জাতীয় খাবার বা ফলমূল
। যেমন আমলকি, আমড়া , কামরাঙ্গা, বরই,
লেবু, কমলা , আঙ্গুর, পেঁপে, আনারস, জাম ইত্যাদি
ফলে ভিটামিন সি পাওয়া যায় ।
ভিটামিন সি এর অভাবজনিত রোগ সমূহ
ভিটামিন সি এর অভাবে ত্বকের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে । এছাড়াও
ভিটামিন সি এর অভাবে শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় । ভিটামিন সি
এর অভাবে মাড়ি থেকে রক্ত পড়ে এবং দেহে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় । অনেক সময়
ভিটামিন সি এর অভাবে দেহের ক্লান্তি অনুভব হয়ে থাকে ।
ভিটামিন ডি
মানব দেহের জন্য অপরিহার্য একটি ভিটামিন হলো ভিটামিন ডি । যা দেহের
মধ্যে উৎপন্ন হয়ে থাকে ।এই ভিটামিন ডি মানব দেহের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস
শোষণ কাজে সহায়তা করে । এবং ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস
নিয়ন্ত্রণকারী হল ভিটামিন ডি । এছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে ভিটামিন ডি ।
বিভিন্ন সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে ভিটামিন ডি । এমনকি দেহের
হাড় দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং দেহের বিকাশ ঘটাতে সহায়তা করে
। এছাড়াও শরীরের বেশি শক্তিশালী ও সংকোচন করে তুলতে সহায়তা করে ভিটামিন ডি
। এর কারণে যেমন বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায় তেমনি ভিটামিন
ডি এর অভাবে দেহের বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে ।
আরও পড়ুন ঃ ছোলা বাদাম কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
ভিটামিন ডি এর উৎস
ভিটামিন ডি এর উৎস গুলোর মধ্যে লক্ষ্য করলে পাওয়া যায় মাছ ও মাংস
। আমিষ জাতীয় খাবারে ভিটামিন ডি এর পুষ্টি উপাদান রয়েছে বিদ্যামান
। যেমন মাছ, , মাংস , ডিমের কুসুম, দই, ওট মিল, এবং
মাশরুমের মধ্যে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় । এছাড়াও ভিটামিন ডি এর আরো
একটি উপাদান হলো দুধ ।
ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ
ভিটামিন ডি এর অভাবে চুল ঝরে পড়ে, হাড় ও পেশির দুর্বলতা এবং দেহে ব্যথা
হয়ে থাকে । দেহের অস্থিসন্ধে গুলির বিকৃতি ঘটে ভিটামিন ডি এর অভাবে
। শরীরে যখন ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয় তখন মানসিক চাপ এবং ঘন ঘন
মেজাজ পরিবর্তন হয় । এবং অনেক সময় শরীরে ক্লান্তি ভাব মনে হয় এ কারণটি
হয়ে থাকে ভিটামিন ডি এর অভাবে ।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে এবং যেকোনো কাটা বা ঘাস শুকাতে প্রয়োজনের
থেকে বেশি সময় লেগে যায় । ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরের মেদ বহুল কোষ গুলো
নিঃসরনে বাধা সৃষ্টি হয় ।
ভিটামিন ই
ভিটামিন ই মানব দেহে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে থাকে । ভিটামিন ই
এর মধ্যে রয়েছে পলিয়ান্স্যাচুরেটেড । যা একটি এসিড এবং কোষ ঝিল্লর
উপাদান । এবং এর সাথে আরো অন্যান্য অক্সিজেন সংবেদনশীল উপাদান
যেমন ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এর অক্সিডেশন প্রতিরোধ করে থাকে
।
অনেক সময় দেখা যায় খাবারের দ্বারা ভিটামিন ই এর অভাব পূরণ হয় না
। আর ভিটামিন ই এর অভাব শরীরের মধ্যে থেকে যাওয়ার কারণে অনেক
ধরনের সমস্যা দেখা যায় । তখন সকল সমস্যা দূর করতে ভিটামিন ই
ক্যাপসুল ব্যবহার করা হয় । ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করার
ফলে ত্বকের লাবণ্যতা, ও চুল পড়া বন্ধ হয় ।
ভিটামিন ই এর উৎস
বিভিন্ন ফল্মূলে এবং খাবারে ভিটামিন ই এর পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় । এই
পোস্টটি উপাদান আমাদের দেহের অনেক সমস্যার সমাধান হিসেবে সাহায্য
করে । ভিটামিন ই এর উৎস গুলো হল, সবুজ
শাকসবজি, যেমন- পালং
শাক, বাধাকপি, ফুলকপি, মোটরশুটি ইত্যাদি সকল
সবুজ শাকসবজিতে পাওয়া যায় ।
এছাড়া আরো এভোকাডো, সালমান মাছ, চরবিহীন মাংস, সামুদ্রিক
মাছ, ডিম, বাদাম, মাছের তেল ও সূর্যমুখীর বীজে ভিটামিন
ই পাওয়া যায় ।
ভিটামিন ই এর অভাবজনিত রোগ
ভিটামিন ই এর অভাবে যেসব রোগ আমাদের শরীরে দেখা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
শরীরের বেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া। এবং অসার ভাবে চলাফেরা করা ইত্যাদি
। ভিটামিন ই এর অভাবে দেহের ক্ষয় রোধ ও রক্ত জমাট
বাধতে বাধা প্রদান করে । এছাড়াও চুল ঝরে যাওয়া এবং শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ
।
ভিটামিন কে
ভিটামিন কে যেমনি ভাবে মানবদেহে উপকার নিয়ে আসে ঠিক তেমনিভাবে উদ্ভিদ ও
অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যেও ভিটামিন কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
থাকে । ভিটামিন কে এর একটি অংশ উদ্ভিদ দ্বারা সংশ্লেষিত হয়ে
থাকে । ভিটামিন কে এর তিনটি রূপ রয়েছে । যেমন -
১ ফাইলোকুইনোন ২ মেনাকুইনোন এবং ৩ মেনাডিয়ন
।
ভিটামিন কে এর তিনটি রূপ উদ্ভিদ, প্রাণী এবং স্তন্যপায়ী
প্রাণীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ থাকে । ভিটামিন কে শরীরের রক্ত জমাট
বাধার কাজে সহায়তা করে এবং দেহের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দের ক্ষতিকর পদার্থ
নিঃসৃত করে ।
ভিটামিন কে এর উৎস
ভিটামিন কে এর উৎস গুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রো কলি , কপি, পালং
শাক, লেটুস, সয়াবিন তেল, শালগম, গাজরের রস, বেদানা রস, রসুনের
পাতা, জলপাই তেল, টমেটো, কলা,ইত্যাদি । এ সকল উপাদান থেকে ভিটামিন কে পাওয়া
যায় ।
আরও পড়ুন ঃ বাঁকা দাঁত সোজা করার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
ভিটামিন কে এর অভাবজনিত রোগ
ভিটামিন কে এর অভাবে দেহের রক্ত জমাট বাঁধা এবং অভ্যন্তরীণ রক্তপাত ঘটায়
। ভিটামিন কে এর অভাব মানুষের শরীরে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় । এবং
ভিটামিন কে এর অভাবে মানুষের শরীরে ক্যান্সারের মতো রোগ বাসা বাঁধে । ত্বকের
বার্ধক্য নষ্ট হওয়ার কারণ হলো ভিটামিন কে এর অভাব । ভিটামিন কে এর অভাবে
ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে ।
কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়
আমাদের মাঝে অনেক মানুষ রয়েছে যারা ঘুমাতে ভালোবাসে এবং অতিরিক্ত ঘুমায়
। তবে এর মাঝে অনেক রয়েছে যারা সঠিকভাবে ঘুমোতে পারে না । ঘুম কম
হওয়ার কারণ হলো শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব । দেহে যখন ভিটামিন ডি এর অভাব
দেখা দিবে তখন মানুষের স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ঘুম কম হবে । এর কারণ হলো
ভিটামিন ডি মেলাটোনিন হরমোন ক্ষরণ করতে সাহায্য করে ।
ঘুম কম হওয়ার পেছনে কারণ হলো ভিটামিন ডি তাই শুধু নয় বরং ঘুম কম হওয়ার পেছনে ভিটামিন বি ৬ রয়েছে । মেলাটোনিন এবং সেরাটনিন নামক দুটি হরমোন এর কারণে মানুষের ঘুম কম হয় । যখন মানুষের শরীরে মেলা টনিন এবং সেরাটনিন এর অভাব দেখা দেয় তখন মানুষের ঘুম কম হয় ।
এছাড়া দেহে যখন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ১২ এবং ফ্যাটি এসিডের ঘাটতি থাকে তখন মানুষের শরীরে ঘুম কম হয় । আশা করি বুঝতে পেরেছেন ঘুম কম হওয়ার কারণসমূহ ।
মানুষের শরীরে কত ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায়
প্রতিটি মানুষের দেহে ভিটামিন রয়েছে । কারণ ভিটামিন ছাড়া মানুষের বেঁচে
থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে । আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি এবং যেকোনো রোগ থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে ভিটামিন
। মানবদেহের ভিটামিন পাওয়া যায় ৬ ধরনের । তার মধ্যে ভিটামিন বি
এর সংমিশ্রণ রয়েছে ।
ভিটামিন এ , ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন
কে এবং ভিটামিন বি । ভিটামিন বি এর গুলো হলো বি ১, বি ২, বি
৩, বি ৫, বি ৬, বি ৭, বি ৯, বি ১২ । এই সকল উপাদানগুলো রয়েছে ভিটামিন বি এর
মধ্যে । এ সকল ভিটামিনের সমন্বয়ে মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
এবং রোগ থেকে বেঁচে থাকে ।
শেষ কথা
ভিটামিনের ভালো দিক এবং খারাপ দিক সম্পর্কে এই আর্টিকেলটি থেকে বিস্তারিত জানতে
পেরেছেন ।মানবদেহে ভিটামিনের গুরুত্ব কতটুকু তা এ আর্টিকেল এর
মাধ্যমে জানতে পেরেছেন এবং বুঝতে পেরেছেন । কোন ভিটামিনের অভাবে কি কি
রোগ হয় সেই সকল বিষয়ে আমরা জেনেছি । এজন্য আমাদের উচিত এই
আর্টিকেলের তথ্য অনুযায়ী ভিটামিনের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া ।
এবং আমাদের দেহের প্রতি যত্নশীল হওয়া অত্যন্ত জরুরী । সুস্থ থাকতে হলে
অবশ্যই শরীরের যত্ন নিতে হবে । এবং সঠিক খাবার গ্রহণ করতে হবে তবে
সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া সম্ভব । আশা করি এই আর্টিকেলটি থেকে ভিটামিন
সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পেরেছেন এবং অনেক কিছু শিখেছেন ।
আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং সকলকে সচেতন হতে
সাহায্য করবেন । আশা করি ভালো থাকবেন । " ধন্যবাদ"
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url