নিম তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা - চুলের যত্নে নিম তেল
নিমের তেল, কথাটা শুনতে যদিও অবাক লাগার মত কিন্তু এর দারুণ উপকারিতা রয়েছে
। বিশেষ করে চুলের যত্নে নিমের তেল খুবই উপকারী । আপনি যদি নিম তেলের
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই
।
নিম তেল চুলের জন্য কতটা উপকারী চলুন তা জেনে নেওয়া যাক পুরো আর্টিকেলটি থেকে । এবং নিমের তেলের কতগুলো উপকার রয়েছে সকল কিছু জানতে পারবেন এখান থেকে ।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ চুলের যত্নে নিম তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা ।
- ভূমিকা
- চুলে নিম তেলের উপকারিতা
- নিম তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা
- চুলের যত্নে নিম তেল
- চুলের গোড়ায় চুলকানি
- চুলে নিমের তেল ব্যবহারের নিয়ম
- নিম তেল তৈরির পদ্ধতি
- লেখক এর মন্তব্য
ভূমিকা
বিভিন্ন ডাক্তার কিংবা বিশেষজ্ঞদের মতে জানা যায় যে নিম তেল খুবই উপকারী
। তবে নিম তেলের উপকারিতা বেশি পাওয়া যায় চুলের যত্নে । আমরা অনেকে
চুল ওঠার বা চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগতে থাকে । এ সমস্যা থেকে খুব
দ্রুত সমাধান দিতে পারে নিম তেল । এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর
করতেও বিশেষ উপকারী এই তেল ।
নিম তেল কিভাবে বানাতে হয় এবং নিম তেলের ব্যবহার সহ এর উপকারিতা অপকারিতা সকল
কিছু জানতে পারবেন এই আর্টিকেলের মধ্যে । এ আর্টিকেলে খুব সুন্দর ভাবে এ সকল
বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে । এজন্য পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে
। তাহলে সকল তথ্য বিস্তারিত জানতে পারবেন ।
চুলে নিম তেলের উপকারিতা
নিমের তেল আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারী একটি তেল । নিমের তেলে রয়েছে
বিভিন্ন ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ট্রাই গ্লিসারাইড । এর সকল উপাদান চুলের
পুষ্টি জগতে সাহায্য করে । নিমের তেল ব্যবহার করার ফলে চুল সিল্কি এবং পাতলা
হয়ে ওঠে । এছাড়াও আমাদের অনেকের চুল পড়ে যাওয়া সমস্যা রয়েছে ।
এই চুল পড়ে যাওয়া সমস্যা থেকে সমাধান পেতে আমরা নিমের তেল ব্যবহার করতে পারি
। কারণ নিয়ম হলো একটি প্রাকৃতিক উপাদান । এবং এর মধ্যে পর্যাপ্ত
পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে যা চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য
করবে । এছাড়াও চুলের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর
ব্যাকটেরিয়া, এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি ইনফ্লামেটরি সহ
বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে নিমের তেল ।
আবার আমরা অনেক সময় দেখি আমাদের মাথায় খুশকি দেখা যায় । এই খুশকির
কারণে সারাক্ষণ মাথা চুলকাতে থাকে । মাথার এই চুলকানি দূর করতে বা
খুশকি দূর করতে নিয়মিত নিমের তেল ব্যবহার করতে পারেন । এতে করে মাথার খুশকি
দূর হয়ে যাবে এবং খুব দ্রুত চুলকানি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন ।
নিম তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা
নিমের তেল চুলের জন্য যেমন উপকারী ঠিক তেমনি আমাদের ত্বকের জন্যও উপকারী । নিম তেলে যে সকল পুষ্টি উপাদান থাকে সেগুলো আমাদের চুল মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় । এছাড়াও নিমের তেল ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে সমাধান পেতে সাহায্য করে ।
চুলে নিম তেলের উপকারিতা
- চুল সিল্কি এবং মজবুত করে তোলে
- খুশকি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে
- উকুনের সমস্যা থেকে রক্ষা করে
- মাথার চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে
- চুল ঘন এবং লম্বা করতে সাহায্য করে
- চুলের ফ্রিজিনেস দূর করতে সাহায্য করে
চুলে নিম তেলের অপকারিতা
-
নিম তেলে এমন কিছু পদার্থ থাকে যা শিশুদের জন্য রেসিন ড্রমের উপসর্গ
বাড়িয়ে তোলে ।
-
অহেতুক নিমের তেল ব্যবহার করার ফলে শরীরে দুর্বলতার শিকার হতে হয় এবং
বিনা প্রয়োজনে নিমের তেল ব্যবহারের ফলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে
।
-
গর্ভাবস্থায় নিমের তেল ব্যবহার করা উচিত নয় । কারণ গর্ভাবস্থায় একটি
গর্ভবতী মহিলার বিভিন্ন সঠিক পুষ্টির প্রয়োজন হয় । কিন্তু নিমের
তেল ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন পুষ্টি থেকে ব্যাহত হয়ে যায় ।
-
বিনা প্রয়োজনে নিমের তেল ব্যবহার করলে এর বিশেষ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা
দিতে পারে ।
চুলের যত্নে নিম তেল
আবার অনেকের খুশকির সমস্যা রয়েছে । বিশেষ করে খুশকির সমস্যা শীতকালে বেশি
দেখা যায় ।কিন্তু অনেকের প্রায় সব সময় এই সমস্যা হয়ে থাকে । তাই খুশকি
থেকে বেঁচে থাকতে নিয়মিত নিমের তেল ব্যবহার করতে পারেন । নিমের তেল
ব্যবহারের নিয়ম নিচে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে ।
আবার অনেকের চুল ছোট হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন । যাদের চুল ছোট তারা চুল মজবুত ও লম্বা করতে নিমের তেল ব্যবহার করতে পারেন । কারণ নিমে বিভিন্ন প্রকার এসিড এবং পুষ্টি উপাদান থাকে যা চুলকে লম্বা করতে এবং মজবুত করতে সাহায্য করে ।
চুলের গোড়ায় চুলকানি
চুলের গোড়ার চুলকানি দূর করতে বাজারে বিভিন্ন প্রকার তেল পাওয়া যায়
। আপনি চাইলে সে সকল তেল ব্যবহার করে মাথার চুলের গোড়ার
চুলকানি দূর করতে পারবেন । চুলের গোড়ার চুলকানি দূর করতে ব্যবহার করতে
পারেন অলিভ অয়েল তেল । অলিভ অয়েল খুব ভালো এবং উপকারী একটি তেল
। যা মাথার বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে ।
এছাড়াও আমরা সাধারণত নারকেল তেল ব্যবহার করে থাকি । নারকেল তেল মাথার
ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে । আমাদের মাথার ত্বক যখন শুষ্ক হয়ে যায় তখন
সেখান থেকে মাথা
চুলকানি শুরু
হয় ।এই চুলকানি দূর করতে নারকেল তেলের ব্যবহার করতে পারেন । এটি
দীর্ঘমেয়াদী উপকারে একটি তেল ।
আরও পড়ুন ঃ মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায়
এছাড়াও মাথার চুলকানি দূর করতে বা চুলের যত্নে টি ট্রি ওয়েল ব্যবহার করতে
পারেন । চুলের যত্নে এবং মাথার ত্বকের উপকারে অন্যতম উপকারী একটি তেল টি
ট্রি ওয়েল । যা চুল সুন্দর শিল্পী রাখতে এবং চুল ঘন করে তুলতে
সহায়তা করে । এর পাশাপাশি মাথার চুলকানি দূর করে থাকে । চুলের যত্ন
এবং মাথার ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত টি ট্রি অয়েল
ব্যবহার করতে পারেন ।
চুলে নিমের তেল ব্যবহারের নিয়ম
নিম গাছের ফল থেকে নিমের তেল পাওয়া যায় । কিন্তু সেটা সরাসরি গাছ থেকে
পাওয়া যাবে না নিম গাছের ফল দিয়ে তৈরি করে সেটি ব্যবহার করতে হবে তেল হিসেবে
। নিমের তেল ব্যবহার করার বিভিন্ন উপকার রয়েছে । যেমন চুলের যত্নে নিম
তেল ব্যবহার করা হয় । এবং মাথার ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে
নিম তেল ব্যবহার করা হয় ।
নিম তেল ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে । এই নিয়ম অনুযায়ী তেল ব্যবহার করলে
অবশ্যই এর সঠিক উপকার উপভোগ করতে পারবেন । যেকোনো তেল যেমন নারকেল
তেল, কিউট ইত্যাদি তেলের সঙ্গে নিম তেল কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে নিন
। এরপর তা ভালোভাবে পুরো মাথায় মাখিয়ে নিন । পুরো মাথা মাখানোর পর এক
থেকে দুই ঘন্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে মাথা ধুয়ে ফেলুন ।
নিম তেল ব্যবহারের ফলে মাথার উকুন দূর হয়ে যাবে খুব দ্রুত । কারণ নিম তেল
তিতা হয়ে থাকে ।এজন্য খুব দ্রুত মাথা থেকে উকুন দূর হয়ে যায় । এছাড়াও
মাথার
ত্বকে যে সকল
সমস্যা বা চর্ম রোগ হয়ে থাকে সে সকল রোগ দূর হয়ে যাবে নিম তেল ব্যবহারের
ফলে । তবে অবশ্যই নিম তেল ব্যবহারের সময় যেকোনো তেলের সাথে সেটা মিশ্রণ করে
ব্যবহার করতে হবে ।
নিম তেল তৈরির পদ্ধতি
এর জন্য প্রথমে কয়েকটি নিমের পাতা পরিষ্কার করে নিতে হবে । ভালোভাবে সেগুলো
ধুয়ে পরিষ্কার করার পর বেটে পেস্ট তৈরি করতে হবে । এই পেস্ট তৈরি করার পর
তার সাথে নারকেল তেল কিনবা অলিভ অয়েল তেল মিশিয়ে নিতে হবে । মেশানো হয়ে
গেলে সেগুলো পরিষ্কার একটি পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে ।
এরপর সেগুলো একটি পরিষ্কার ছাকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়ে আলাদা একটি পরিষ্কার পাত্রে
জমা করে নিতে হবে । এবার আপনি আপনার ইচ্ছামত নিম তেল তৈরি করে নিলেন
। এখন যেকোনো সময় এটি ব্যবহার করতে পারবেন । তবে গোসলের আগে নিম
তেল ব্যবহার করা সব থেকে ভালো । কিন্তু নিম তেল ব্যবহারের সময় অবশ্যই অন্য
তেলের এটি ব্যবহার করতে হবে ।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় বন্ধুগণ আজকে আমি আপনাদের মাঝে নিম তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং চুলের
যত্নে নিম তেল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি । যতটুকু সম্ভব সঠিক তথ্য
আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি । আশা করি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েছেন
। আর্টিকেলটি যদি সম্পূর্ণ পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই নিম তেলের বিভিন্ন উপকার
ও ব্যবহার সম্পর্কে জেনেছেন ।
চুলের যত্নে এবং মাথার ত্বকের যত্নে নিম তেল ব্যবহার করে এর উপকার পেতে পারেন
। এবং অনেক সময় মাথার ত্বকের বিভিন্ন চর্মরোগ কিংবা মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে
ওঠে । আবার অনেকের মাথায় খুশকির উপদ্রব বেশি দেখা যায় । এর সকল
সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন নিম তেল । নিম তেলের ব্যবহার
এবং নিম তেল তৈরি পদ্ধতি এই আর্টিকেলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ।
এ আর্টিকেল দেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করলে আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন
। প্রিয় বন্ধু হওয়ার আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে
। আজকের মত এতটুকুই ।এরকম আরো পোস্ট পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট
করুন । এবং আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন । "
ধন্যবাদ "
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url